প্রতিনিধি ২ জানুয়ারি ২০২৫ , ২:৫৯:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।শর্তসাপেক্ষে ৭৬৪ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।গত ২৬ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদোন্নতি বঞ্চিত ৭৬৪ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাকে সরকারি চাকরিতে পুনঃবহাল না করা এবং ভবিষ্যতে তারা কখনো পুনঃর্বহালের দাবি করতে পারবে না— এমন শর্তে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে ‘স্ট্যাগার্ড ওয়ে’তে শুধু বকেয়া বেতন বাবদ ২১ কোটি টাকা দেয়া হবে।একই শর্তে পর্যায়ক্রমে তাদের বকেয়া আনুতোষিক ও পেনশন বাবদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।এক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রতা সাধনের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতির প্রতিবেদন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে এবং সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসের ৪ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মনিটরিং সাব-ডিভিশনে পাঠানোর নির্দেশেনা দেয়া হয়েছে চিঠিতে।
গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে অবসরোত্তর কর্মকর্তাকে পদন্নোতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
অর্থবিভাগ থেকে জানা গেছে,ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি বাস্তবায়নে বকেয়া বেতন,আনুতোষিক,পেনশন বাবদ এককালীন আনুমানিক ৪২ কোটি টাকা এবং পরে পেনশন বাবদ বার্ষিক অতিরিক্ত ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন হতে পারে।
২০০৯ সাল থেকে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আমলে সরকারি চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং এ সময়ের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর কমিটি গঠন করা হয়েছিল।কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খান। ১০ ডিসেম্বর কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয় ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান,কমিটির কাছে মোট ১৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল।এরমধ্যে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদন ছিল।যাচাই–বাছাই করে কমিটি সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড)–এ ৪১ জন,অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন,যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন ও উপসচিব পদে ৪ জনকে পদোন্নতির সুপারিশ করে।
যেহেতু তারা অবসরে গেছেন,সে জন্য তাদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল কমিটি।
এই ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে কমিটি ৯ জনকে চার ধাপ,৩৪ জনকে তিন ধাপ,১২৬ জনকে দুই ধাপ ও ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেয়ার সুপারিশ করেছে।