সারাদেশ

হিজলায় মেঘনার বালুমহালঃ-ইজারার ১৬ কোটি টাকা তুলতে শতাধিক ড্রেজার

  প্রতিনিধি ১২ মে ২০২৫ , ৬:০০:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল ব্যুরো।।মেঘনার মাত্র ১০০ একর বালুমহালে শতাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে।পরিবহনের জন্য চলছে শত শত বাল্কহেড।যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু ড্রেজার ও বাল্কহেড।এর ফাঁকফোকর দিয়ে নৌকা চলাও দুষ্কর।বরিশালে হিজলা উপজেলার দুর্গম এলাকার মেঘনার সাওরা-সৈয়দখালীতে এ ঘটনা ঘটছে।

জানা গেছে,জেলা প্রশাসনের ৫৬ লাখ ১০ হাজার টাকা দরের বালুমহাল ১৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে।দিন-রাত শতাধিক ড্রেজারে বালু খনন করে এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছেন ইজারাদার আব্দুল বাসেদ।এতে নদীভাঙনের হুমকিতে পড়ায় আন্দোলনে নামেন স্থানীয়রা।

গত শনিবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ৫৩টি ড্রেজার,৩৬টি বাল্কহেড জব্দ করেছে। অভিযানের সময়ে অসংখ্য ড্রেজার পালানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন আব্দুল বাসেদসহ ছয়জন।তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে,বালু কাটার পাশাপাশি মেঘনায় চলাচল করা পণ্যবাহী জাহাজ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। জব্দ করা টাকাগুলো আদায় করা চাঁদা।কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন অর রশীদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা

জাহাজে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন।

মেঘনাবেষ্টিত উপজেলার হিজলা মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন গৌরবদী ইউনিয়ন লাগোয়া মেঘনার সাওরা-সৈয়দকান্দি পয়েন্ট।চাঁদপুর,লক্ষ্মীপুর ও শরীয়তপুর থেকে বয়ে আসা মেঘনার তিন মুখ এই পয়েন্টে মিলেছে।জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত এ বালুমহাল বালুখেকোদের জন্য লোভনীয় এলাকা।এটি ইজারা পেতে নেপথ্যে থেকে ইজারাদারকে টাকা বিনিয়োগসহ সব ধরনের সহায়তা দেন স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা।তাদের সঙ্গে রয়েছেন চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের ব্যবসায়ীরা।

নির্ধারিত ১০০ একর বালুমহালটি এ বছর ১৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছেন বাসেদ।

সরকারি দর ছিল ৫৬ লাখ ১০ হাজার টাকা।ইজারা বাগাতে গত ২৫ মার্চ এক সেনাসদস্যকে মারধরসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনায় হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব দেওয়ান মনির,বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু,যুবদল সভাপতি মাকসুদুর রহমানসহ আটজনের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন,গত ১ মে বালু তোলা শুরু হয়। প্রথম দিন থেকে শতাধিক ড্রেজার স্থাপন করা হয়।সার্বক্ষণিক প্রায় ৮০টি ড্রেজার চালু থাকত।এতে এলাকাটি ভাঙনের হুমকির মুখে পড়লে গত শুক্রবার নদী ও ভূমি রক্ষা কমিটি খুন্না বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।ওইদিন হিজলা সফরে ছিলেন উপজেলার সন্তান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।তিনি বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য শুনে জেলা প্রশাসনকে অভিযানের নির্দেশ দেন।এর পর শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কোস্টগার্ড অভিযান চালায়।

আরও খবর

Sponsered content