খেলাধুলা

সাত উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ

  প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২৩ , ১:১৮:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।সাত উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ। তিনশর আগেই আয়ারল্যান্ডকে থামালো বাংলাদেশ।কোনও টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে কখনও জেতেনি বাংলাদেশ।

এবার সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এলো তারা। ২০১৭ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচেই জিতলো।

গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউ জিল্যান্ডকে হারানোর পর এই প্রথমবার টেস্টে জয় পেলো বাংলাদেশ। কিউইদের হারানোর পর ৯ টেস্টের আটটিই হেরে যায় তারা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অবশ্য ‘ডমিনেট’ করতে পারেনি স্বাগতিকরা।দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের চাপে পড়ে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল।

শেষ পর্যন্ত ১৩৭ রানের লিড নিয়ে আইরিশরা থামলে জয় পেতে সমস্যা হয়নি বাংলাদেশের।যদিও ৩ উইকেট হারিয়েছে তারা।বাংলাদেশ- প্রথম ইনিংসে ৮০.৩ ওভারে ৩৬৯/১০ (মুশফিক ১২৬, সাকিব ৮৭, মিরাজ ৫৫, লিটন ৪৩, তামিম ২১, মুমিনুল ১৭, তাইজুল ৪, শরিফুল ৪, ইবাদত ০, নাজমুল হোসেন শান্ত ০; ম্যাকব্রাইন ৬/১১৮)।

আয়ারল্যান্ড- প্রথম ইনিংসে ৭৭.২ ওভারে ২১৪/১০ (টেক্টর ৫০, ক্যাম্ফার ৩৪, মা. অ্যাডায়ার ৩২, ম্যাকব্রাইন ১৯, বালবির্নি ১৬, ম্যাককলাম ৭, কমিন্স ৫, মুর ১; তাইজুল ৫/৫৮)।

ফল: সাত উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।

লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত দলীয় ৪৩ রানের মধ্যে বিদায় নেন। তামিম ইকবাল দলীয় স্কোর একশ পেরোনোর পর থামেন। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম ছিলেন সাবলীল। ৪৭ বলে তার হাফ সেঞ্চুরি জয়ের পথ দেখায় বাংলাদেশকে। ২৭তম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি উদযাপন করেন মুশফিক। তারপর ছক্কা হাঁকিয়ে মুমিনুল স্কোর সমান করেন। ২৮তম ওভারে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে দলকে ৭ উইকেটে জেতান মুশফিক। ৪৮ বলে ৭ চারে ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ২২ বলে ২০ রানে খেলছিলেন মুমিনুল। ১২৬ ও অপরাজিত ৫১ রানে ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিক।

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়াmushiন মুশফিকুর রহিম দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করলেন ৪৭ বলে। তার দারুণ ইনিংসে জয়ের পথ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের।

১৩৮ রানের লক্ষ্যে নেমে মুশফিকুর রহিমের মতো আক্রমণাত্মক হতে পারেননি তামিম ইকবাল। দেখেশুনে ইনিংস বড় করার চেষ্টা করছিলেন।তাতে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ।কিন্তু শেষ করে আসতে পারলেন না ওপেনার, লক্ষ্য থেকে ৩৩ রান দূরে থাকতে আউট তিনি।বেন হোয়াইটের বলে থামলেন ৩১ রান করে।পুল করে বল পাঠান মিড উইকেটে,মিড অন থেকে দৌড়ে এসে ক্যাচ ধরেন কমিন্স। তার ৬৫ বলের ইনিংসে ছিল ৩ চার।

২ উইকেটে ৮৯ রানে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর তৃতীয় ওভারে দলীয় স্কোর একশতে। ১৯তম ওভারে মুশফিক চার মেরে দলকে একশর ঘরে নেন।

৪৩ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে জয়ের পথে রেখেছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম।তৃতীয় উইকেটে তাদের জুটি চল্লিশ ছাড়িয়েছে। ১৩৮ রানের লক্ষ্যে নেমে চতুর্থ দিন প্রথম সেশন শেষে ১৬ ওভারে আর কোনও উইকেট না হারিয়ে সংগ্রহ ৮৯ রান। মুশফিক বেশ আক্রমণাত্মক। ২০ বলে পাঁচটি চারে ২৯ রানে খেলছেন তিনি। ৪৮ বলে ২টি চারে ২৪ রানে অপরাজিত তামিম। আর ৪৯ রানের প্রয়োজন নিয়ে লাঞ্চে গেছে বাংলাদেশ।

আগের ইনিংসে ওপেনিংয়ে নেমে গোল্ডেন ডাক মারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবার তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেও সুবিধা করতে পারলেন না। ৯ বল খেলে ৪ রানে প্যাভিলিয়নে বালাদেশের ব্যাটার। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের বলে স্লিপে অ্যান্ডি বালবির্নির ক্যাচ হন তিনি। একেবারে মাটির সঙ্গে লাগোয়া ক্যাচ ধরায় টিভি আম্পায়ারের শরণাপন্ন হন অনফিল্ড আম্পায়াররা। বেশ কয়েকবার রিপ্লে দেখার পর আউটের সিদ্ধান্ত হয়। ৪৩ রানে ২ উইকেট হারালো বাংলাদেশের।১৩৮ রানের লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশ ওপেনিংয়ে পরিবর্তন এনেছে। তামিম ইকবালের সঙ্গে প্রথম ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত উদ্বোধনী জুটি গড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে তামিমকে সঙ্গ দিচ্ছেন লিটন দাস। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নির্বিঘ্নে লক্ষ্যে ছুটছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মার্ক অ্যাডায়ারের বাউন্সে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হন তিনি। পুল করতে গিয়ে তার হেলমেটের পেছনে লেগে বল নিচে পড়ে স্টাম্পে হালকা আঘাত করে, কিন্তু বেল পড়ে যায়। হতভম্ব লিটন, ১৯ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৩ রানে থামেন।

১৩ রানে ৪ উইকেট হারানো আয়ারল্যান্ড শেষ পর্যন্ত থামলো। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা ২৯২ রানে অলআউট হয়েছে। ১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে এই ইনিংস খেলতে নেমে তারা লিড নিয়েছে ১৩৭ রানের। ৮ উইকেটে ২৮৬ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল সফরকারীরা। আর ৬ রান যোগ করতেই শেষ দুটি উইকেট হারায় তারা। তিনশর আভাস দিলেও তারা ব্যর্থ। ইবাদত হোসেনই নেন শেষ দুটি উইকেট। এদিন নিজের প্রথম ওভারে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে বোল্ড করেন। নতুন দিনে আর একটি রান যোগ করেন আইরিশ ব্যাটার। ১৫৬ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে সাজান ৭২ রানের ইনিংস। ওই ওভারটি মেডেন উইকেট নেন ইবাদত। শেষ উইকেটে গ্রাহাম হিউম ও বেন হোয়াইট আরও ২৮ বল খেলেন। ইবাদত তার দিনের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে ভেঙে দেন এই জুটি। ১৪ রানে আউট হন হিউম, বল তার ব্যাটে আউটসাইড এজ হয়ে ডাইভ দেওয়া লিটন দাসের গ্লাভসে ধরা পড়ে। একমাত্র টেস্ট জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৩৮ রান।

এই ইনিংসে তাইজুল সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। তিনটি উইকেট পান ইবাদত।

ম্যাকব্রাইনকে প্যাভিলিয়নে পাঠালেন ইবাদত

চতুর্থ দিন নিজের প্রথম ওভারে ইবাদত হোসেন পেলেন সাফল্য। ৭২ রানে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে ফেরত পাঠালেন প্যাভিলিয়নে। ১৫৬ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে বোল্ড হন আইরিশ ব্যাটার। শুক্রবার পঞ্চম ওভারে উইকেটের দেখা পেলো বাংলাদেশ। ৯ উইকেটে ২৮৯ রান আয়ারল্যান্ডের।

শেষ দুটি উইকেটের খোঁজে বাংলাদেশ

১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমেছিল আয়ারল্যান্ড। ১৩ রানে পড়ে যায় চার উইকেট। সেখান থেকে হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। এখন বাংলাদেশকে চাপে রেখেছে তারা।

৮ উইকেটে ২৮৬ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছে আয়ারল্যান্ড। ম্যাকব্রাইন ৭১ ও গ্রাহাম হিউম ৯ রানে অপরাজিত আছেন। তাদের লিড ১৩১ রানের। বাকি দুটি উইকেট যত তাড়াতাড়ি ফেলতে পারবে, বাংলাদেশের জন্য ততই ভালো!

আরও খবর

Sponsered content