অপরাধ-আইন-আদালত

ভোলার সদর উপজেলার সমাজসেবা অফিসার দেলোয়ার’র বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা!!!

  প্রতিনিধি ১৪ জুন ২০২২ , ৮:৫৩:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।।বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবতীর সাথে সমাজসেবা অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন বরিশাল নগরীতে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে একটানা ১০ বছর সংসার জীবন অতিক্রম করেছেন।

এ সব ঘটনার স্বাক্ষী রয়েছে পর পর তিন স্থানে ভাড়া থাকা বসতঘরের বাড়িওয়ালাসহ স্থানীয়রা। এমন অভিযোগ এনে ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বনানী বড়াল নামের এক যুবতী।

১৪ জুন (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১১ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বনানী বড়াল’র লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময় তিনি ঝালকাঠী সমাজ সেবা অফিসে ০৬ (ছয়) মাস মেয়াদী কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হয়েছিল। এ প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার সময় ঝালকাঠী সমাজসেবা অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন’র সাথে তার পরিচয় হয়।

একসময় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্ক চলাকালীন সময় তাকে (বনানী) পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়।

স্বামীর সংসারে থাকা অবস্থায় দেলোয়ার হোসেন প্রায়ই বনানীর মোবাইল নম্বরে কল করত। বনানী যোগাযোগ করতে বারণ করলেও দেলোয়ার তা শুনত না। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে বনানীর সংসারে অশান্তি শুরু হয় এবং স্বামীর সাথে বিবাহের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

পরে বনানীকে বিয়ে করে সংসার করার প্রস্তাব দেয় দেলোয়ার। প্রস্তাবে রাজি হয়ে বনানী তার পিতার বাড়ি ত্যাগ করে দেলোয়ারের কাছে চলে আসে। এ সময় দেলোয়ার ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার পদে কর্মরত ছিল। এখনও ওই পদে কর্মরত রয়েছেন।

বরিশাল এসে দেলোয়ার-বনানী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেয়। প্রথমে নগরীর নথুল্লাবাদ ভাড়ার বাসায় বসবাস করতে শুরু করে। পরে সিএন্ডবি রোড মীরা বাড়ির পুল সংলগ্ন এলাকার একটি বসতঘরে এবং এরপর একই এলাকায় আরেকটি ভাড়ার বাসায় তারা বসবাস শুরু করে। এখনও সেখানে রয়েছে।

দেলোয়ার ভোলা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসত আবার রোববার সকালে চলে যেত। তাছাড়া সরকারী ছুটির দিনও আসত। মাঝেমধ্যে দেলোয়ার তার গ্রামের বাড়িও চলে যেত। তাদের ১০ বছর একত্রে সংসার করার বিষয়টি জানেন বসতঘরের ভাড়া থাকা স্থানের অনেক স্থানীয়রা।

সংসার জীবনে বনানী দু’বার গর্ভবর্তী হলেও দেলোয়ার তা নষ্ট করে ফেলেছে। চলমান বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২য় সপ্তাহের মধ্যে বনানী দেলোয়ারের কাছে সামাজ ও ধর্মীয় অনুযায়ী বৈধভাবে স্ত্রীর অধিকার চায়।প্রয়োজনে বনানী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে। এ সব না মানলে বনানী আর শারীরিক সম্পর্ক করবো না। এ কথা বলামাত্রই ওই ভাড়ার বসতঘরেই বসেই বনানীকে ধর্ষণ করে।

তারপর থেকে দেলোয়ার আর বনানীর সাথে যোগাযোগ করে না। এবং ভাড়ার বসতঘরে যায় না।বনানী একাধিকবার ভোলায় গিয়ে দেলোয়ারকে ফিরিয়ে আনতে চাইলেও ব্যর্থ হয়। বর্তমানে বনানী মানবেতর জীবন-যাপন করতেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।

তিনি আরো বলেন, উপায়ন্ত না পেয়ে এ ঘটনার অনুকূলে গত ১১/০৫/২২ ইং তারিখে দেলোয়ার হোসেন কে আসামী করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে।

দেলোয়ার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের ঘেরাখালী গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি সমাধানের জন্য বনানী গত ২৩/০৩/২২ তারিখে বরিশাল জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে একটি আবেদন করেছিল।

গত ০৩/০৪/২২ ইং তারিখে বিভাগীয় সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করেছে। তাছাড়া ভোলা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকা মহাপরিচালকের বরাবর আবেদন করে কোন সুফল পাননি।

বনানী প্রতারণার শিকার হলেও তিনি মনে প্রাণে দেলোয়ার হোসেন কে স্বামী হিসেবেই গ্রহণ করেছিল। এখন তিনি স্বামীর অধিকার চায়। ঘটনার বসতঘর ভাড়া থাকা স্থানীয়রাই স্বাক্ষী।

ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে সংবাদ সম্মেলনের অনুকূলে জানান, বনাননীকে সে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন। পরিচয়ের পাশাপাশি একত্রে ছবি থাকতেই পারে। কিন্ত বনানী যা বলে তা সত্য নয়। বনানীর ভাড়ার বসতঘরে তিনি মাঝেমাঝে যেতেন বলে স্বীকার করেন।

ভোলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং লোকমুখে ঘটনা শুনেছি। এমকি অভিযোগকারী তার কাছে গিয়েছিল। লিখিত অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক স্বপন কুমার মুখার্জী বলেন, বনানী বড়াল’র একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কিন্ত মীমাংশার জন্য আবেদনকারীকে ডাকা হলে তিনি আসেননি। এখন এ ঘটনায় বনানী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এটি আদালতের বিষয়। এখন আমার হাতে কিছু করার নেই। আদালত থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক স্বপন কুমার মুখার্জী বলেন, বনানী বড়াল’র একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কিন্ত মীমাংশার জন্য আবেদনকারীকে ডাকা হলে তিনি আসেননি। এখন এ ঘটনায় বনানী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এটি আদালতের বিষয়। এখন আমার হাতে কিছু করার নেই। আদালত থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content