সম্পাদকীয়

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে বাংলাদেশে দুটি ভিন্নধর্মী অবস্থান

  প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৯:০৮:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে বাংলাদেশে দুটি ভিন্নধর্মী অবস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।একদল তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করতে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছে,অন্যদিকে তাঁর অনুসারীরা তাঁর প্রত্যাবর্তনের দাবিতে আন্দোলন বা সক্রিয়তার চেষ্টা করছে।তবে আপনার উল্লিখিত “সাংস্কৃতিক কর্মী ও শিল্পীদের” আন্দোলনের ডাকের বিষয়টি সাম্প্রতিক একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত।

বর্তমান পরিস্থিতির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো:

বিচারের দাবিতে আন্দোলন: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যার পর ২০২৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে নতুন করে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়েছে।এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি হলো ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে তাঁর বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন এই দাবিতে অনড় রয়েছে।

সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর চাপ ও পাল্টা বক্তব্য: এই আন্দোলনের উত্তাল সময়ে কিছু পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক আধিপত্য ভাঙার ডাক দেওয়া হয়েছে।বিশেষ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান ১৯ ডিসেম্বর এক সমাবেশে ছায়ানট ও উদীচী-র মতো সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে “তছনছ” করার আহ্বান জানান,যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এর ফলে অনেক শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী বর্তমানে ঝুঁকির মুখে রয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

আওয়ামী লীগ ও অনুসারীদের অবস্থান: অন্যদিকে,শেখ হাসিনার অনুসারী এবং আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী-সমর্থক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন টকশো বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে কথা বলছেন,তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।

সরকারের পদক্ষেপ: অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অপরাধীদের কোনো ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।

সারসংক্ষেপে,বর্তমানের অধিকাংশ আন্দোলন শেখ হাসিনাকে “বিচারের মুখোমুখি করতে” ফিরিয়ে আনার পক্ষে।একই সাথে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কিছু সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে এক ধরণের উদ্বেগ ও পাল্টা প্রতিবাদের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content