সম্পাদকীয়

রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এখন পর্যন্ত যে সকল অন্যায় সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন-ইউনূস

  প্রতিনিধি ২৩ মার্চ ২০২৫ , ৬:০৭:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এখন পর্যন্ত যে সকল অন্যায় সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন,তার কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:

১. ৬৬৬ কোটি টাকা কর প্রত্যাহার:
ড. ইউনূস তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের ৬৬৬ কোটি টাকা কর পরিশোধের রায় আদালতকে ব্যবহার করে প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন।

২. গ্রামীণ ব্যাংকের কর অব্যাহতি:
ড. ইউনূস তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রামীণ ব্যাংকের আয়কর পাঁচ বছরের(২০২৯ সাল পর্যন্ত ) জন্য মওকুফ করিয়ে নিয়েছেন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি হাজার কোটি টাকার বেশি কর সুবিধা পাবে।

৩. সরকারি শেয়ারের পরিবর্তন:
‘গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ’ সংশোধনের নামে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চাকুরিকাল ৬৫ বছর এবং গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারি শেয়ার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

৪. শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা প্রত্যাহার:
ড. ইউনূসের নামে শ্রম আইন লঙ্ঘনের ৫ মামলার কার্যক্রম ও ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট শ্রম আদালতের দেওয়া ছয় মাসের কারাদণ্ড আদালতকে ব্যবহার করে প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন।

৫. দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার:
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।

৬. গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি অনুমোদন:
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন নিয়েছেন।

৭. গ্রামীণ শক্তি দইয়ে ভেজাল মামলা:
২০১১ সালে দায়ের করা ভেজাল সংক্রান্ত মামলাটি ২০২৫ সালের ১৭ মার্চ হাইকোর্টের মাধ্যমে বাতিল করিয়ে নিয়েছেন।

৮. ডিজিটাল ওয়ালেট অনুমোদন:
ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম ডিজিটাল ওয়ালেট (সমাধান) কোম্পানির অনুমোদন পেয়েছেন।

৯. জনশক্তি রপ্তানি লাইসেন্স:
ড. ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিস লিমিটেড নামে জনশক্তি রপ্তানির সনদ পেয়েছেন।

১০. রোহিঙ্গাদের নিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসা চালুর উদ্যোগ।যা শীঘ্রই কার্যক্রমে যাবে।

১১. গ্রামীণ-স্টারলিংক ব্যবসার প্রক্রিয়া শুরু, যা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে।

১২. ঘনিষ্ঠজনদের নিয়োগ:
‌ক) ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠজন নূরজাহান বেগমকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।তিনি গ্রামীণ ব্যাংক এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

‌খ) লামিয়া মোরশেদ নামের একজনকে ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।লামিয়া মোরশেদ গ্রামীণ সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে জড়িত এবং ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

‌গ) ড. ইউনূসের সহোদর ভাই প্রয়াত মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের পুত্র অপূর্ব জাহাঙ্গীরকে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট উপপ্রেস সচিব পদে নিয়োগ দিয়েছেন।গণমাধ্যমে অভিজ্ঞতাহীন হলেও পারিবারিক সম্পর্কের কারণে তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

ঠিক এইভাবেই ড. ইউনূস ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রীয় সুবিধা গ্রহণ করেছেন এবং নিজের বিরুদ্ধে যত দুর্নীতি,অর্থ পাচার,ও শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাতের মামলা ছিল,সেগুলি আদালতকে প্রভাবিত করে প্রত্যাহার করেছেন।

অন্যদিকে,রাষ্ট্র সংস্কারের নামে জনগণের উপর ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও গণগ্রেফতার চালাচ্ছেন।আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ড. ইউনূস রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মিডিয়া ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীসহ শীর্ষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ করছেন।দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতি, আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি, এবং নারীদের নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ার পরেও কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে,তিনি রাষ্ট্র সংস্কারের নামে আওয়ামী লীগ নিধন এবং নিজের সব মামলা প্রত্যাহার করিয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content