সারাদেশ

বরিশালে বিএনপিপন্থি ব্যবসায়ীদের পদ বাগানো নিয়ে বিরোধ

  প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২৪ , ১০:২১:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল ব্যুরো।।স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে পুরোনো সংগঠন বরিশাল চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ।এটি অনেক বছর আগে অকার্যকর সংগঠনে পরিণত হয়েছে।ক্ষমতাসীন দলের সিদ্ধান্তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতিসহ পরিচালক মনোনীত হওয়ায় এ হাল হয়েছে। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর একই প্রক্রিয়ায় চেম্বারের পদ বাগানো নিয়ে বিএনপিপন্থি দু’দল ব্যবসায়ীর প্রকাশ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।মারামারিও হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে।

একাধিক ব্যবসায়ী জানান,প্রতিষ্ঠার পর থেকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে বরিশাল চেম্বারের কমিটি হয়নি।যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল সেই দলের লোকজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেতৃত্বে এসেছেন।রাজনৈতিক বিবেচনায় এমন অনেকে সদস্য পদ পেয়েছেন,যারা চেম্বারে সদস্য হওয়ার মতো ব্যবসায়ী নন।

সংগঠনের সর্বশেষ সভাপতি মহানগর আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু টানা ১৪ বছর এ পদে ছিলেন। ২০১৮ সালে গঠিত দুই বছর মেয়াদি কমিটি দিয়ে সরকার পতন পর্যন্ত পার করেন।শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে যান।সিনিয়র সহসভাপতি জাতীয় পার্টির নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।তাঁকে সামনে রেখে নির্বাচনী তপশিল দিয়ে বিএনপি নেতারা পদ বাগাতে তৎপরতা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। একাধিক ব্যবসায়ী জানান,এবার সভাপতি পদপ্রত্যাশী দু’জন হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য এবায়দুল হক চান ও কোতয়ালী থানা কমিটির সাবেক সভাপতি শেখ আব্দুর রহিম।দু’জনকে ঘিরে বিএনপিপন্থি সদস্যরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছেন।এর আগে বিএনপি যতবার ক্ষমতায় ছিল,চাঁন ছিলেন চেম্বারের সভাপতি।শেখ রহিম ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়ে সভাপতি ছিলেন। শেখ রহিমের অভিযোগ,চাঁন এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হতে চান।আবার নির্বাচন হলে চাঁনের জয় নিশ্চিত করতে গোপনে ভুয়া ভোটার করা হচ্ছে।এ প্রক্রিয়া গত ৬ অক্টোবর রাতে হাতেনাতে ধরা পড়ায় চাঁনের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা হয়।

শেখ রহিম বলেন,নগরের আমানতগঞ্জে চাঁনের বাসার অদূরে অফিস সচিব ইলিয়াস হোসেনের বাসা।সচিবের বাসায় চেম্বারের যাবতীয় ফাইলপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৬ অক্টোবর রাতে তিনি ইলিয়াসের বাসায় গিয়ে দেখতে পান,ভুয়া ভোটার তৈরির কার্যক্রম চলছে।তখন রেজিস্টার খাতাসহ অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন।এ সময় তাকে মারধর করে সব ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তবে ইলিয়াস বলেন,শেখ রহিমের ভয়ে চেম্বারে বসে কাজ করতে পারেন না।তাই রেজিস্টারসহ অন্যান্য কাগজপত্র বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ৬ অক্টোবর রাতে রহিম তার বাসায় ঢুকে অশালীন আচরণ করেন।একপর্যায়ে রেজিস্টার খাতাসহ অন্যান্য কাগজপত্র ছিনিয়ে ইজিবাইকে উঠে পালানোর চেষ্টা করেন।তখন স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তাকে মারধর করেছে।এ প্রসঙ্গে চাঁন সমকালকে বলেন,হট্টগোল শুনে বাসা থেকে বের হয়ে দেখেন শেখ রহিমকে লোকজন মারধর করছে। তিনি তাকে উদ্ধার করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,সরকারের পতনের পর জাহাঙ্গীর হোসেন মানিকের নেতৃত্বে গত ১৮ আগষ্ট সাধারণ সভা হয়।সভায় নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও ৬ জানুয়ারি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়।সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য গ্রহণের নির্ধারিত সময় শেষে ২৩২ জনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।শেখ রহিম অভিযোগ করেন,এরপর রেজিস্টার খাতা অফিস সচিবের বাসায় নিয়ে ঘষামাজা করে আরও অনেকের নাম ঢোকানো হয়েছে।

বোর্ডে ১ নম্বর পরিচালক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর নাম ছিল সভাপতিরও ওপরে।পোর্ট রোডের ইলিশ ব্যবসায়ী নীরব হোসেন টুটুলও ছিলেন পরিচালক।মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক টুটুলের প্রধান পরিচয় ছিল সাদিকের ‘ক্যাশিয়ার’।

আরও খবর

Sponsered content