সারাদেশ

বন্দর প্রকল্পে ৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ হবে

  প্রতিনিধি ৮ মে ২০২৫ , ৪:২৯:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।চট্টগ্রামের তিন বন্দর প্রকল্পে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বা ৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ হবে। বন্দর নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি খাতে ধারাবাহিকভাবে এই বিনিয়োগ হবে।

আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি প্রকল্প পরিদর্শন শেষে এই বিনিয়োগের কথা জানান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

আজ সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়ার চর,বে টার্মিনাল ও বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন করেন আশিক চৌধুরী।এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম,বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান,প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আশিক চৌধুরী বলেন,সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের আওতায় লালদিয়ার চরে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক এপিএম টার্মিনালস কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ৬০ থেকে ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।সাগর উপকূলে বে টার্মিনাল প্রকল্পে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল এবং আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড ১০০ কোটি ডলার বা ১ বিলিয়ন করে ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করবে।বন্দরে পুরোদমে চালু থাকা নিউমুরিং টার্মিনালেও বিদেশি বিনিয়োগের কথা জানান তিনি।

আশিক চৌধুরী বলেন,বাংলাদেশকে বৈশ্বিক উৎপাদনের অঞ্চল করতে হলে বন্দর–সুবিধা অনেক বাড়াতে হবে।বিদেশি বিনিয়োগ হলে বন্দরের দক্ষতা বাড়বে।এ জন্য দেশীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

এ সময় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন,আগামী ২০৩১ সালে বে টার্মিনাল চালু হবে। এতে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।আবার বে টার্মিনাল থেকে সরাসরি ইউরোপ–আমেরিকায় কনটেইনারবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।এখন সিঙ্গাপুর, লকলম্বোর মতো বন্দরগুলোর মাধ্যমে কনটেইনার আনা–নেওয়া করতে হয়।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়

বন্দর প্রকল্প পরিদর্শন শেষে দুপুরে হোটেল র‍্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বেভিউতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন আশিক চৌধুরী।এ সময় ব্যবসায়ীরা সহজে ব্যবসার পথে নানা প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন।

মতবিনিময় সভায় কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন,বিদেশি বিনিয়োগ আনার উদ্যোগ ভালো।তবে দেশীয় বিনিয়োগকারীদেরও দেখা দরকার।কারখানা চালু করতে সময়মতো গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমের আলীহুসাইন বলেন,উদ্যোক্তাদের জন্য ঢাকা থেকেই সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে।এ কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের এখনো ফাইল নিয়ে ঢাকায় যেতে হয়।এ জন্য ঢাকায় আলাদা করে গাড়ি, বাসা ও অফিস নিতে হয়।ব্যবসা সহজ করতে হলে ঢাকার বাইরে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা দিতে হবে।

পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান বলেন, দেশীয় উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন।দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘নতুন জায়গায় বন্দর–সুবিধা নির্মাণে বিদেশি বিনিয়োগ হওয়া উচিত। নিউমুরিং টার্মিনালে যেখানে সবকিছু আছে সেখানে কীভাবে বিদেশি বিনিয়োগ হবে,তা বুঝে আসছে না আমাদের।’

মতবিনিময় সভায় আশিক চৌধুরী বলেন,গ্যাসের সমস্যা সমাধানে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।তিনি বলেন,বিমানবন্দর ও বন্দর–সুবিধা কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রামে ফ্রি ট্রেড জোন (মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল) হচ্ছে।এ–সংক্রান্ত একটি জাতীয় কমিটি প্রকল্প এলাকা যাচাই–বাছাই করছে।চট্টগ্রামের চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল,মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো প্রকল্পের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,বন্দরের নতুন প্রকল্পগুলো সফল হলে এসব প্রকল্পও সফল হবে।

মতবিনিময় সভা শেষে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আশিক চৌধুরী।

আরও খবর

Sponsered content