প্রতিনিধি ১৫ জুলাই ২০২৫ , ৪:৫০:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।ভারতে কিনেছেন বাড়ি,পরিবারসহ করছেন বসবাস।তবুও চাকরিতে বহাল তবিয়তে আছেন বাংলাদেশের একটি কলেজে।শুধু তাই নয়,নিয়মিত বেতন-ভাতাও তুলে নিচ্ছেন তারা।

এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ও তার স্ত্রী একই কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডলের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে,ছুটির নামে দীর্ঘদিন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীতে নিজেদের বাড়িতে বসবাস করে আসছেন তারা। ইতোমধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পেয়ে শিক্ষক দম্পতির এমপিও বাতিল করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের একাধিক শিক্ষক বলেন,দীর্ঘদিন যাবৎ অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন এই শিক্ষক দম্পতি।কলেজ গভর্নিং বডি ও প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তারা।যে কারণে অনিয়ম করলেও তেমন কেনো প্রভাব পড়েনি।তাদের সহযোগিতা করছেন অফিস সহায়ক সজল সরকার।
ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা প্রেমান্দ সরকার বলেন,অনিয়ম করে চাকরি নিয়েছেন দুর্লভানন্দ বাড়ৈ।তিনি বাড়ি করেছেন ভারতের কল্যানীতে এবং সেখানেই তার স্ত্রী সন্তানরা রয়েছেন।অথচ বাংলাদেশ থেকে তারা বেতন তুলে নিচ্ছেন।দোষ ধামাচাপা দিতে নাম মাত্র মেডিকেল ছুটি নিয়েছেন শিক্ষিকা চম্পা রানী। যেখানে বেসরকারি কলেজে এক মাসের বেশি ছুটি হয় না, সেখানে তিনি ৬ মাসের ছুটি নিয়েছেন।এটা কীভাবে সম্ভব?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর তারা (শিক্ষক দম্পতি) চলে যান ভারতে।এর কিছুদিন পর স্ত্রীকে রেখে অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ দেশে ফিরে আসেন।তবে এখনো তার স্ত্রী ভারতেই অবস্থান করছেন।ভারতে যাওয়ার আগে চেকে স্বাক্ষর করে রেখে যান চম্পা রানী।নিয়মিত তার বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে,এই দম্পতির অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় চলতি বছরের ১৮ মার্চ অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ও তার স্ত্রী প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডলের এমপিও বাতিল করা হয়।

অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ওই কলেজের আরেক শিক্ষক বিমল পান্ডে।
এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ জানান,তার স্ত্রী (প্রভাষক চম্পা রানী) বর্তমানে মেডিকেল ছুটিতে ভারতে রয়েছেন।দুই দফায় তিনি ৬ মাস ছুটি নিয়েছেন এবং সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী চলছে।
কালকিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ডাসার উপজেলার দায়িত্বরত) মো. আশরাফুজ্জামান বলেন,তাদের দুইজনের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।অনিয়মের তথ্য পেলে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করব।
ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ-উল আরেফীন বলেন,অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।যদি আইন অনুযায়ী প্রমাণিত হয়,তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

















