অপরাধ-আইন-আদালত

পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় মাদারীপুরের সাবেক এসপি কারাগারে

  প্রতিনিধি ২০ নভেম্বর ২০২৪ , ৪:৪৩:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি।।মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) সুব্রত কুমার হালদারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন।

২০১৯ সালে পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলাটি করে দুদক।এর আগে সুব্রত কুমার হালদার উচ্চ আদালত থেকে তিন মাসের জামিনে ছিলেন।কারাগারে যাওয়ার আগপর্যন্ত তিনি রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমিতে কর্মরত ছিলেন।বেলা একটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আকতারুজ্জামান।

এ মামলায় মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে গত ১১ জুলাই মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন সাবেক কনস্টেবল নুরুজ্জামান ও জাহিদুল ইসলাম,সাবেক শহর উপপরিদর্শক (টিএসআই) গোলাম রহমান ও পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল সহকারী পিয়াস বালা।আরেক আসামি মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের হায়দার ফরাজীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল দুদক।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,২০১৯ সালের ২৮ মে পুলিশে টিআরসি পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সদর দপ্তর।পরে ওই বছরের ২৬ জুন ৩১ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারীকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।এর আগেই ২৪ থেকে ২৬ জুন কয়েক ধাপে ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আসামিদের কাছ থেকে জব্দ করে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি বিশেষ দল।পরে অনুসন্ধানে পুলিশ সদর দপ্তর জানতে পারে,উদ্ধার করা টাকা বিভিন্ন চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে চাকরিপ্রত্যাশী ৩২ পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র যাচাই করে দুদক।এসব উত্তরপত্র থেকে দুদক জানতে পারে,উত্তরপত্রের প্রথম পৃষ্ঠার নিচে ডান কোনায় উদ্ধৃতি চিহ্ন,হাইফেনসহ বিভিন্ন প্রকার বিরামচিহ্ন দেওয়া রয়েছে।পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় পাস করানোর জন্য এসব চিহ্ন দিতে বলে অভিযুক্ত চক্রটি।উত্তরপত্রে এসব চিহ্ন থাকা ৩২ পরীক্ষার্থীকে বেশি নম্বরও দিয়েছেন সুব্রত কুমার হালদার। সাবেক এই পুলিশ সুপারের হয়ে ঘুষের টাকা নেন অন্য আসামিরা।

দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আকতারুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন,প্রধান আসামি সুব্রত কুমার হালদার এত দিন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন।তিনি বুধবার মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদন করেন।পরে আদালত শুনানি শেষে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশনা দেন।এ মামলায় অন্য আসামিরা কারাভোগ শেষে নিম্ন আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।

দুদকের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘সুব্রত কুমার হালদার স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আমরা তার তীব্র আপত্তি জানাই।পরে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।সুব্রত কুমারের বিরুদ্ধে দুদক স্পষ্টভাবে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে এবং অভিযোগপত্র দাখিলও করেছে। তিনি প্রকাশ্যে ঘুষ নিয়ে অপরাধ করেছেন।তাই রাষ্ট্র তৎপর হয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে।রাষ্ট্র ও দুদক ন্যায়বিচার পেয়েছে।’

আরও খবর

Sponsered content