অপরাধ-আইন-আদালত

বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে পুলিশ-সাধারন মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি!

  প্রতিনিধি ২৪ জুন ২০২৩ , ১২:৫৪:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পুত্রবধুর মিথ্যা মামলা ও হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন শ্বশুর আলকাজ উদ্দিন হাওলাদার। বুধবার বেলা ১২ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুত্রবধূর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তিনি।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমর বয়স ৭৩ বছর, আমি বাটন মোবাইলও ঠিকমতো চালাতে পারিনা শুধুমাত্র কল রিসিভ করা ছাড়া অথচ আমি একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আসামি। আমার বড় ছেলের ২য় পুত্রবধূ প্রতারক সালমা বেগম ও কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগশাজশে লাগাতার হয়রানির শিকার হয়ে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার পুত্রবধূ ইতোমধ্যে আমাদের অন্তত ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তারপরও সে দীর্ঘদিন যাবত আরো মোটা অংকের অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন থানা ও আদালতে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ এবং মামলা দিয়ে আমার পরিবারকে ভয়ানকভাবে হয়রানি করে আসছে।;;

তিনি আরো বলেন, সালমা বেগমের সকল মিথ্যা অভিযোগ ও মামলার হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে মঠবাডাড়িয়া মোকাম বিজ্ঞ সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। সেই মামলায় সালমার বিরুদ্ধে প্রিন্ট পত্রিকাসহ ভিডিও প্রতিবেদন ও হয় । এতে সালমা র প্রতারণার মুখোশ উন্মোচিত হলে সে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে যোগসাজস করে। পরে ডিআইজি তার পক্ষ নেয় এবং আমাদের সাথে অন্যায় ভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ শুর করে। ২৯ বছর বয়সী সালমা আক্তারকে কলেজ ছাত্রী ও অসহায় বাচ্চা মেয়ে পরিচয় দিয়ে ডিআইজি আক্তারুজ্জামান তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রতারক সালমার পক্ষক্ষ নিয়ে পর পর ২ টি ভিত্তিহীন মনগড়া ও একপেশে কল্পকাহিনী নির্ভর পোস্ট করেন। কিন্তু আসলে সালমা আক্তার কয়েকবছর ধরে কলেজে পড়ে না এমন প্রমাণও আছে আমাদের কাছে। এমনকি সালমা আক্তার লন্ডন প্রবাসী এক বিএনপি নেতার নির্দেশে কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তাকে টার্গেট করে প্রতারণা করে যাচ্ছে মর্মে ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

আলকাজ উদ্দিন বলেন, সালমার অপকর্ম নিয়ে প্রথম যে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়, তার জের ধরে ডিআইজি আক্তারুজ্জামান এর নির্দেশে গত ১১ মে রাত আনুমানিক ৮টায় মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার আমাকে থানায় ডাকেন। আমি আমার দূর সম্পর্কের নাতি আল আমিনকে সাথে নিয়ে হাজির হই। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশ সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আমার নাতি আল আমিনকে থানার হাজতে বন্দি করে এবং ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার আমাকে বলে ওপরের নির্দেশ আছে, সাংবাদিককে কল করে সালমার বিরুদ্ধে যে নিউজ আছে তা ডিলেট করান নয় তো আপনার নাতিকে মামলা দিয়ে চালান করে দেবো। এরপর আমার কাছ থেকে ঐ রিপোর্ট করা সাংবাদিক মেহেদী হাসান এর নম্বর নিয়ে তাকে কল করে ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার নিউজ ডিলেট করতে বলে নতুবা সাংবাদিককেও ফাঁসিয়ে দেবার কথা বলে।

তিনি বলেন, এরপর সাংবাদিক কর্তৃক প্রমাণসহ প্রকাশ করা ভিডিও রিপোর্টটি ফেসবুক থেকে ডিলেট করা হলে আমার নাতি আল আমিনকে হাজত থেকে বের করা হয়। কিন্তু আমাকে ও আমার নাতিকে সারা রাত থানায় বসে থাকতে বাধ্য করে পরদিন দুপুর ২ টায় ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার একটি ২টি সাদা কাগজে আমাকে সাক্ষর দিতে বলে। এরপর আমি সেই কাগজে সই দেই। অতঃপর ওসি কামরুজ্জামান আমাকে বলে সালমা ২ লাখ টাকা দিলে আমাদের আর হয়রানি করবে না। পূত্রবধূ সালমার প্রতরণার বিষয়টি বিভিন্ন তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় আমি টাকা দিতে রাজি না হলে ওসি কামরজ্জামান বলেন কখনো কখনো হয়রানি থেকে বাঁচতে টাকা দিতে হয়।

আলকাজ উদ্দিন বলেন, অন্যায়ভাবে আমার পুত্রবধূ সালমা আক্তারকে কোন টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় সে ডিআইজি ও পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে আমাদের লাগাতার হয়রানির হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া পুলিশ কর্তৃক বেআইনি ভাবে আমার পরিবারকে থানা হাজতে আটকে রাখা, সাদা কাগজে সাক্ষর রাখা, ও প্রতারক সালমাকে টাকা দিতে বলা পুরো বিষয়টিতে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি আক্তারুজ্জামান এর নির্দেশে পুলিশকে ব্যবহার করে জোর পূর্বক প্রতারক সালমার পক্ষে প্রমান তৈরি ও তার তার বিপক্ষে থাকা প্রমাণ লোপাটের প্রচেষ্টা চলছে। সালমা আমার ছেলে নাসির উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে অস্বীকার করে আমার ছেলে ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ডিআইজির নির্দেশে আমার ছেলের বিয়ে পড়ানো কাজী মাওলানা মাহমুদুল হাসান এর কাবিন বইও বেআইনিভাবে জব্দ করার অপচেষ্টা করে কিছু পুলিশ কর্মকর্তা। এছাড়া প্রতারক সালমা আক্তারও ডিআইজি আক্তারুজ্জামান এর নাম ভাঙ্গিয়ে আমাদের ও সেই কাজীকে সরাসরি হামলার হুমকি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ডিআইজি আক্তারুজ্জামান এর নির্দেশনায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশের এসব অপতৎপরতার আমরা রীতিমতো ভীত, শঙ্কিত, বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। এপর্যন্ত সে আমার পরিবার, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৩০ টি অভিযোগ এনে জিডিও মামলা করেছে, যার একটি অভিযোগও প্রমাণিত হয়নি। এ বিষয়ে আমরা পুলিশ সদরদপ্তরে আইজিপি বরাবর মঠবাড়িয়া থানার ওসি ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু এরপর ও প্রতারক সালমা আক্তার আমাকে, আমার ছেলের ১ম পূত্রবধূ, কাজী, ও সাংবাদিক সহ অন্তত ৭ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরো একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাদের হয়রানি করছে।

এসময় বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি আক্তারুজ্জামানের যোগসাজসে পুত্রবধূ সালমা আক্তারের মিথ্যা মামলা ও হয়রানি থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন তিনি।

https://www.facebook.com/thedailysambad/videos/1619291385224420/?app=fbl

আরও খবর

Sponsered content