সম্পাদকীয়

তারেক রহমান ও ‘বিপ্লবী সরকার’: সময়ের দাবি নাকি রাজনৈতিক কৌশল

  প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ৮:১১:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণের প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাম্প্রতিক বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, তারেক রহমানকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণা করতে হবে—যা নিছক একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়,বরং বর্তমান বাস্তবতায় একটি কৌশলগত অবস্থান।

তারেক রহমান,বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে,গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দলীয় রাজনীতি পরিচালনা করে আসছেন প্রবাস থেকে।বিরুদ্ধ পরিবেশ,মামলা,দমন-পীড়ন ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও তিনি দলকে সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছেন—এটি তাঁর রাজনৈতিক দক্ষতার একটি বড় প্রমাণ।বিএনপির তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রামের যে ধারাবাহিকতা,তার নেপথ্যে তারেক রহমানের কৌশলগত নির্দেশনা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

বিশেষত একদলীয় শাসনের অভিযোগ,ভোটাধিকার সংকট এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণের বিরুদ্ধে তারেক রহমান বারবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রশ্নে তাঁর অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট—নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ,সরকার হতে হবে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল।

মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে ‘বিপ্লবী সরকার’ শব্দটি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে মূলত একটি রাজনৈতিক প্রতিরোধ ও বিকল্প শাসন কাঠামোর ধারণা উঠে এসেছে।এটি রাষ্ট্রবিরোধী কোনো আহ্বান নয়; বরং বিদ্যমান গণতান্ত্রিক সংকট থেকে উত্তরণের একটি রাজনৈতিক প্রতীকী ভাষা।ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়,দমনমূলক শাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন অনেক সময়ই এমন শব্দচয়নকে আশ্রয় করে।

সম্পাদকীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়,তারেক রহমানকে ঘিরে এই বক্তব্য ভবিষ্যৎ রাজনীতির ইঙ্গিত বহন করে।এটি একদিকে যেমন বিএনপির আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দেওয়ার প্রয়াস,অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা—গণতন্ত্রকে চিরতরে দমন করা যায় না।

অতএব, ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার দাবি কেবল ব্যক্তি তারেক রহমানকে কেন্দ্র করে নয়;এটি মূলত জনগণের ভোটাধিকার,ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের রাজনৈতিক উচ্চারণ।সময়ই বলে দেবে,এই উচ্চারণ কতটা বাস্তব রূপ পায়।

আরও খবর

Sponsered content