সারাদেশ

জীবনযুদ্ধে প্রতিবন্ধী নয়ন অসুস্থ ভাইকে বাঁচাতে সকলের কাছে চেয়েছেন সহযোগিতা

  প্রতিনিধি ৪ মার্চ ২০২৩ , ১:৫৫:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি॥শারীরিক প্রতিবন্ধী নয়ন কুমার দাস (৩২)।বাস করেন বরিশাল জজ কোর্টের পেছনে ঘর বরণ গল্লিতে।বসতঘরে রয়েছেন অসুস্থ যুবক ভাই ও বিধবা বৃদ্ধা মা।তাদের মুখে অন্ন যোগার করতে জীবনযুদ্ধে প্রতিবন্ধী নয়ন। বাবার মৃত্যুর পরে প্রায় এক যুগ ধরে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে টেবিল নিয়ে করছেন ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা।যা আয় হয় তাতে ৩ বেলার ১ বেলা পরিবারের সকলকে না খেয়ে থাকতে হয়।তারমধ্যে আবার ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য ঋণী হয়েছেন প্রায় পৌনে ৩ লাখ টাকা।এখন তার ভাইকে বাঁচাতে উন্নত চিকিসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫/৬ লাখ টাকা।অর্থের অভাবে চলমান ঔষধও ক্রয় করতে পারছেন না।অভাব-অনটনের মধ্যে অসুস্থ ভাইয়ের চিকিৎসার টাকা যোগাড় ও সংসারের ব্যয় পরিচালনা করতে দিশেহারা।অশ্রু ভরা দু’চোখে এলোমেলোভাবে উপরোক্ত কথাগুলো ব্যক্ত করেছেন প্রতিবন্ধী নয়ন কুমার দাস।দুর্বিষহ জীবনের মধ্যে নয়ন তার ভাইকে বাঁচাতে বরিশাল সিটি মেয়র,জেলা প্রশাসক ও সমাজ সেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ সমাজের ধনার্ঢ্য হৃদয়বান ব্যক্তিসহ সামাজিক,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নেতাকর্মী এবং নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা করার অনুরোধ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখে তার পিতা সুনীল কুমার দাস মারা যায়।তখন সংসারে ছিল ৩ ভাই ১ বোন ও মা।বাবা জীবিত থাকতেই বোনের বিয়ে হয়েছিল।বড় ভাই একজন দিনমজুর।বিয়ের পর স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে আলাদা বসবাস করে।মেঝো ভাই অসোক কুমার দাস জীবন ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে।

সে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ‘বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি’ কার্যালয়ে বেসরকারীভাবে এমএলএসএস পদে কাজ করতেন।কাজেও যেতে না পারেন না,তাই বেতনও পান না।ভাইয়ের সুচিকিৎসার জন্য আশা সমিতি থেকে ঋণ (লোন) নিয়েছি ৯০ হাজার টাকা এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করেছি প্রায় ৭০ হাজার টাকা।এখন পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য ভাইয়ের পেছনে ব্যয় হয়েছে প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা।এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকা।সেই সামর্থ্য আমাদের নেই।ভাই অসোককে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসবে কিনা?তা জানি না।

তবে যদি কেউ ঘটনার বাস্তবতা যাচাই বাছাই বা সরেজমিনে জানতে দেখতে চায় বা আর্থিক সাহায্য করতে চায় তাহলে আমার (প্রতিবন্ধী নয়ন) ব্যবহৃত মুঠোফোনে ০১৯২৫ ৬০ ৫১ ২২ কল করার অনুরোধ রইল।মোবাইল নম্বরটি নগদ ও বিকাশ করা।এছাড়া প্রতিবন্ধী নয়ন কুমার দাস এর “ন্যাশনাল ব্যাংক লিঃ বরিশাল ব্রাঞ্চ শাখার ব্যাংক এ্যাকাউন্ড নং- ১০১৩০০২৩৭৮১১৯।” উন্নত চিকিৎসার ব্যয় বহন করে ভাই অসোক কে সুস্থ করতে পারবো কিনা?তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়ন।

প্রতিবন্ধী নয়নের মা নীলা রানী দাস বলেন, ছোট ছেলে যা আয় করে তাতে ৩ বেলার ১ বেলা না খেয়ে থাকি।নয়নের ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসায় প্রতিদিন ২/৩ শত টাকা আয় হয়। শুক্র ও শনিবারসহ সরকারী বন্ধের দিন নয়নের ইনকাম বন্ধ। কারণ ওইদিন গুলোতে কোর্ট বন্ধ থাকে।তাছাড়া সরকারীভাবে ৩ মাস পর পর নয়ন প্রতিবন্ধীভাতা পায় ২৫৫০ টাকা এবং ৩ মাস পর পর আমি (নীলা রানী দাস) বিধাব ভাতা পাই ১৫০০ টাকা।এই অর্থ দিয়েই সংসারের সকল ব্যয় বহন করতে হয়।ছেলে অসোক কুমার দাস এর উন্নত চিকিৎসাতো দূরের কথা ডাক্তারের লিখে দেয়া ঔষধও কিনে দিতে পারছি না। বসতঘরে বসে শুধু কান্না করি।

অসুস্থ অসোক বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমাকে ওষুদ দেয় না।আগের তুলনায় আরো অসুস্থ হয়ে গেছি।তারমধ্যে আবার ৩ বেলার ১ বেলা খাবার দেয় না। আমি মনে হয় বাঁচবো না।গরীব হয়ে জন্ম নিয়েছি এটাই দুঃখজনক।

ঘর বরণ গলির অধিকাংশ স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, অসোকের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ক্রমেই নিঃস্ব হয়ে হতদরিদ্র পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন যাপন করতেছে।যা এলাকার সকলেই জানে। ষভাই ও মায়ের মুখে ‘তিন বেলা খাবার তুলে দেওয়ায় প্রতিবন্ধী নয়নের জীবনে চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।’ তাদের অভাব অনটনের সংসারে তিনজনই অচল।তবুও প্রতিবন্ধী নয়নের প্ররিশ্রমের আয়ের মধ্যে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে এই পরিবারের জীবনে।নয়ন তার ভাইকে বাঁচাতে সকলের কাছেই আর্থিক সহযোগিতার অনুরোধ করেছেন।

আরও খবর

Sponsered content