সম্পাদকীয়

জাতিসংঘের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ-বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র করে সরকারই ফেলে দিলো!

  প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২৫ , ৩:৫৬:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।বাংলাদেশের সরকার পতন ষড়যন্ত্রের ক্রেডিট নিতে গিয়ে ফলকার তুর্ক মানবাধিকার কাউন্সিলকে বিতর্কিত করেছেন।একইসাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও একটি পিচ্ছিল বিপদসঙ্কুল পথে ঠেলে দিয়েছেন।সংবিধান অনুসারে যখন ইউনূসকে দেশ ধ্বংসের দায়ে বিচারে ফাঁসি দেয়া হবে,তখন ফলকার তুর্করা আবারো সক্রিয় হবেন,এটি কিরা কেটে বলা যায়।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের হাই কমিশনার ফলকার তুর্ক বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন,জুলাই ষড়যন্ত্রের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে তার “বয়েজ”রা থ্রেট দিয়েছিলো জাতিসংঘ শান্তিমিশনে অংশগ্রহণ বন্ধ করে দিবে।এরই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সরকারের পতন হয়েছে।আমেরিকা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মানবাধিকার কাউন্সিলকে পরিত্যাগ করেছে-এই প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলার চেষ্টা করেন,আমেরিকা পরিত্যাগ করলে কী হবে,কেউ না কেউ তো তাদের কথা শুনে। তখনই বাংলাদেশকে তিনি উদাহরণ হিসেবে নিয়ে আসেন। সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তিনি আরো বলেন, “USAID and foreign assistance played an incredibly important role in the world.”

মানবাধিকার কাউন্সিল:
—————-
প্রথমে মানবাধিকার কাউন্সিলের বিষয়ে আসি।কোনো দেশে যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়,তাহলে তারা “প্রকাশ্যে” তার সমালোচনা করতে পারে,সেই দেশের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে,সেই দেশের ওপরে বা সরকারের ব্যক্তিবর্গের ওপরে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করতে পারে।কিন্তু দেশের সরকার পরিবর্তনের কোনো এক্তিয়ার তাদের নেই। দেশের কোনো নির্দিষ্ট বাহিনীর সাথে তলে তলে যোগাযোগ করে সরকারের বিরুদ্ধে যাওয়ারও কোনো অধিকার তাদের নেই।বাংলাদেশে সরকার যদি জনগণের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে,তাহলে সেটি করেছে পুলিশের মাধ্যমে,র‍্যাবের মাধ্যমে।মানবাধিকার কাউন্সিলের কোনো অভিযোগ থাকলে তারা সরকারের সাথে কথা বলতে পারে,র‍্যাব-পুলিশের সাথে প্রকাশ্যে মিটিং করতে পারে,তাদের কনসার্ন জানাতে পারে। কিন্তু এই পিকচারে সেনাবাহিনী আসে না। সেনাবাহিনী তখনই আসে,যখন সরকার ফেলে দেয়ার জন্য সামরিক শক্তির প্রয়োজন হয়।

স্পষ্টতই মানবাধিকার কাউন্সিল বাংলাদেশের রেজিম চেঞ্জের জন্য কাজ করেছে।কাজটি গোপনে করা হয়েছে,প্রকাশ্যে নয়। এজন্যই “গোপনে” সেনাবাহিনীকে থ্রেট দেয়া হয়েছে,ফলকার তুর্কের স্বীকারোক্তি মতে।USAID এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ফলকার তুর্কের মানবাধিকার কাউন্সিলও জুলাই ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত।

বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তন করবে বাংলাদেশের জনগণ। সেটি হতে হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়,ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নয়। জাতিসংঘসহ অন্যান্য বাইরের সংস্থাগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সুপারিশ করতে পারে; কিন্তু কোনো দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তলে তলে আঁতাত করে অগণতান্ত্রিক উপায়ে রেজিম চেঞ্জের কোনো অধিকার তাদের নেই।বাংলাদেশের সরকার নিপীঁড়ন করছে,ভোট দিচ্ছে না?পর্যাপ্ত প্রমাণ সহকারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুভ করুন,সরকারের ওপর স্যাংশন দেয়ান,দেশের ওপর স্যাংশন দেয়ান।তাদের হালুয়া টাইট হয়ে যাবে।মানবাধিকার সংস্থা এরকম কোনো প্রমাণের ভিত্তিতে শক্ত কোনো মুভমেন্ট করে নি।তারা গিয়ে হাত মিলিয়েছে জুলাই ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের সাথে।জাতিসংঘের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ। আর মানবাধিকার কাউন্সিলের একপেশে কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের সফট পাওয়ারকেও বড়ো পাওয়াররা কেউ স্বীকার করে না।আমেরিকা ঘোষণা দিয়েই তাদেরকে লাথি মেরেছে। আর ফিলিস্তিন-ইজরাইল কনফ্লিক্টেও তাদের কোনো কার্যকারিতা নেই।প্রথম আলো থেকে কোট করি,”ফিলিস্তিনের গাজার পরিস্থিতিকে বিপর্যয়কর উল্লেখ করে ফলকার টুর্ক বলেন, সেখানে যা ঘটছে,তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।” যেখানে গণহত্যা চলছে,সেখানে তারা শুধু উদ্বিগ্ন,অন্যদিকে বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র করে সরকারই ফেলে দিলো!

মানবাধিকার কাউন্সিল যে রেজিম চেঞ্জের ষড়যন্ত্রে জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কখনোই গণতন্ত্র নয়,ডঃ ইউনূস প্রসঙ্গে ফলকার তুর্কের অবস্থানে সেটি পুরোপুরি স্পষ্ট হয়।ইউনূস স্পষ্টতই বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা গ্রহণ করেছে।ছয়মাস ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রেখেছে, নির্বাচন দেয়ার কোনো ইচ্ছে নেই,টাইমলাইন নেই,ফলকার তুর্ক নিশ্চুপ।বাংলাদেশের প্রো-৭১ মানুষকে ইউনূস গণহত্যা করেছে, স্বাধীনতার স্মৃতি-সম্বলিত সবকিছুকে ভেঙে-গুঁড়িয়ে একাকার করে দিচ্ছে রিসেট বাটনের জেনোসাইড সম্পূর্ণ করতে, কোথাও বিচার বলে কিছু নেই,ইউনূস নিজেই স্বীকার করছে দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা খারাপ; কিন্তু মানবাধিকার কাউন্সিলের এ ব্যাপারে কোনো উচ্চবাচ্য নেই।বাংলাদেশে নিপীঁড়িত মানুষেরা তো তাদেরকে টাকা পয়সা দিতে পারছে না!তবে সংবিধান অনুসারে যখন ইউনূসকে দেশ ধ্বংসের দায়ে বিচারে ফাঁসি দেয়া হবে,তখন ফলকার তুর্করা আবারো সক্রিয় হবেন,এটি কিরা কেটে বলা যায়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী:
—————————-
ফলকার তুর্কের সাক্ষাৎকারে তার নিজের বা মানবাধিকার কাউন্সিলের যতোটা ক্ষতি হয়েছে,তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে পাকিস্তানপন্থী দেশের শত্রুদের একটি স্ট্রংহোল্ড যেমন আছে,বাংলাদেশপন্থী দেশপ্রেমিকও আছেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেখলে সেনাবাহিনীর ইতিহাস ভালো না। তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে,জিয়াউর রহমানকেও খুন করেছে,মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সহস্রাধিক সেনা অফিসারকেও খুন করা হয়েছে।বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে ব্যক্তি পর্যায়ে, স্পষ্টতই সামরিক বাহিনীর হত্যার কালচার নিয়ে নাড়াচাড়া করা হয় নি।আর জিয়া হত্যার বিচার হয়নি,এমনকি বিএনপিও জিয়া হত্যার বিচার চাওয়ার সাহস করে না।বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে,সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সহায়ক শক্তি না হয়ে ক্ষমতার ভাগ নিতেই মরিয়া হয়ে উঠেছে।

কোনো গণতান্ত্রিক দেশের সরকার পরিবর্তন সে দেশের সেনাবাহিনীর কাজ নয়।বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে জুলাই ষড়যন্ত্রের সময়ে এমনকি আগস্টের ৪ তারিখ রাতেও সেনাবাহিনী সরকারকে নিশ্চয়তা দিয়েছে তারা ঢাকা রক্ষা করবে।সরকার সেনাবাহিনীকে নির্বিচারে গুলি চালানোর আদেশ দেয়নি। সেরকম কোনো আদেশ দিলে তারা সরকারকে বলতে পারতো,এটা ঠিক হবে না,তারা মবকে ঠেকাবে না।কিন্তু মেটিকুলাস ষড়যন্ত্রের অংশ হওয়ায় তারা ৫ই আগস্ট যে কাজগুলো করেছে,তার কয়েকটা –

ক) পুলিশকে সব থানায় এবং পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে,যাতে সরকার মব প্রতিরোধ করতে পুলিশকে না পায়।

খ) পুলিশ থানায় আবদ্ধ থাকলে মব তাদেরকে খুন করার জন্য একত্রেই পেয়ে যায়।সেনাবাহিনী নিজেও পুলিশের ওপর গুলি করার ভিডিও এভিডেন্স আছে।৪৫০-এর অধিক থানা একত্রে আক্রমণ করে জ্বালিয়ে দেয়া এবং অস্ত্র লুটপাট করা এই ষড়যন্ত্রের অংশ।

গ) ইউনূসের মব ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরসহ সারাদেশে বিনাবাধায় জ্বালাও-পোঁড়াও,হত্যা,ধর্ষণ চালায়।সেনাবাহিনী প্রধান “আমি দায়িত্ব নিচ্ছি” বলে স্পষ্ট ঘোষণা দেয়ার পরেও এগুলো ঠেকাতে কোনো কাজ তো করেইনি; বরং অনেক ক্ষেত্রে সেনাসদস্যদেরকেও লুটপাটে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে।

৫ই আগস্টের পর থেকেও সেনাবাহিনীর এই অপকর্ম সমানভাবে চলমান রয়েছে।ইউনূস আইন করে তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়েছে।এর ফলে মব পুলিশ-আনসার-র‍্যাবকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছে না।আবার বিচারিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীও মবকে পরিকল্পনামাফিকই নিয়ন্ত্রণ করছেনা। ফলে জুলাইয়ের দেশ ধ্বংস ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সব প্রক্রিয়াই এখনো চলমান।যাহোক,এই অভিজ্ঞতা এখন বাংলার আপামর মানুষের প্র‍্যাত্যহিক অভিজ্ঞতা।এটি নিয়ে কথা না বাড়িয়ে অন্য পয়েন্টে যাই।

ফলকার তুর্কের বক্তব্যমাফিক সেনাবাহিনীকে জাতিসংঘ মিশনে না নেয়ার থ্রেট দিতেই তারা সরকার ফেলে দিতে সম্মত/বাধ্য হয়,এটি সেনাবাহিনীর জন্য চরম অপমানজনক।আমরা জানি, বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর চাকুরি মানে শান্তির চাকুরি।দেশের ৮০% সীমান্ত ভারতের সাথে হওয়ায় এবং মায়ানমারের সাথেও কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি না থাকায় সেনাবাহিনীর যে মূল কাজ অর্থাৎ দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে যুদ্ধ করা,সেটি করতে হয় না।এই সাদা হাতি পুষতে দেশের বিপুল পরিমাণ সম্পদ ব্যয় হয়,সেটি নিয়েও তেমন আপত্তি নেই। যুদ্ধ না করতে হওয়ার সুযোগে তারা অনেকটা জামায়াতে ইসলামীর মতোই দেশের প্রায় সব সেক্টরেই কমবেশি বিজনেস ভেঞ্চার খুলে বসেছে,টাকা পয়সা আয় করছে,এটি নিয়েও আমাদের আপত্তি নেই।তবে আমাদের আপত্তি হলো,এক জাতিসংঘ মিশনের টাকাপয়সা বন্ধের থ্রেটেই যদি তারা হেগেমুতে একাকার হয়ে সরকার ফেলে দেয়,তাহলে তাদের নিজস্ব মান-সম্মানই বা থাকে কোথায়!

আপনি যদি বেতন দিয়ে একজন বডিগার্ড রাখেন,তাহলে তার দায়িত্ব আপনাকে সেইভ করা,জাজমেন্টাল হয়ে বা অন্যের দেয়া টাকার বিনিময়ে আপনাকেই খুন করা নয়।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাজ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা,সরকারকে প্রটেক্ট করা,জাতিসংঘ শান্তিমিশনে না নেয়ার থ্রেট কেউ দিলে সরকারকে সেটি জানিয়ে কূটনৈতিকভাবে তার সমাধান করা। জাতিসংঘ শান্তিমিশনের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকার জড়িত, সরকারকে বাইপাস করে এটি সেনাবাহিনীর নিজস্ব কোনো বিজনেস ভেঞ্চার নয়।সুতরাং ফলকার তুর্কের অভিযোগ সত্য হলে -মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য -বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি হঠকারী,দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।

এরকম একটি বিশ্বাসঘাতক বাহিনীকে ভবিষ্যতে জাতিসংঘ মিশনে না নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ উঠতে পারে।তার ওপর রয়েছে জুলাই ষড়যন্ত্রের সময় ৭.৬২ মিলিমিটার গুলিতে প্রায় তিন চতুর্থাংশ মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি।এই বুলেট বেশিরভাগই ব্যবহার করে সামরিক বাহিনী।আন্দোলন জমাতে লাশের সরবরাহকারী হিসেবে সেনাবাহিনীকে বিচারের আওতায় আনার সম্ভাবনা রয়েছে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে স্পষ্টভাবেই বলা আছে, সেনাবাহিনী তাদেরকে কোনোরকম তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে,তাদের ফ্যাক্টফাইন্ডিংয়ে সহায়তা করেনি।তিন চতুর্থাংশ মানুষের মৃত্যুর স্টেকহোল্ডার কারা,সে বিষয়টিও তারা নিশ্চিত করতে পারেনি।এছাড়া সেনাবাহিনীর হাতে প্রত্যক্ষভাবে অন্তত ১ জনকে হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

আমরা চাই না,বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর ভবিষ্যতে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসুক।তবে ফলকার তুর্কের জাতিসংঘ কমিশনের রিপোর্ট এবং আজ তার এই সাক্ষাৎকার সেনাবাহিনীকে অচিরেই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে দিবে।ইউনূস সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে না নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়াও একটি ষড়যন্ত্রের অংশ।বর্তমানে যতো খুন-খারাবি,ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, এজন্যও সেনাবাহিনীকে দায়ী করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে।দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী থেকে এক ট্রাপেই ইউনূস বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে দেশদ্রোহী তকমা লাগিয়ে ছেড়েছে। এ থেকে তাদের ফিরে আসার পথ কোথায়—–?!!!!!

আরও খবর

Sponsered content