অপরাধ-আইন-আদালত

গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ

  প্রতিনিধি ১২ অক্টোবর ২০২৪ , ২:৪৩:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর স্মরণে পটুয়াখালীর বাউফলে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

স্থানীয় সূত্র জানায়,উপজেলার কালাইয়ায় ‘শহীদ আবু সাঈদ-মুগ্ধ স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজকরা প্রায় ৪ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেছে।ব্যবসায়ী,ব্যাংক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হয়। স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মী মিলেমিশে এ চাঁদাবাজিতে জড়িত বলে জানা গেছে।

গত বুধবার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ পুরস্কার বিতরণ করেন।ফাইনাল খেলার কয়েক দিন আগে কালাইয়া বন্দরের ব্যবসায়ী,বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,ব্যাংক, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছানো হয়।খেলায় সহযোগিতার নামে চাঁদা নেওয়া হয়।নির্ধারিত চাঁদা না দিলে বলপ্রয়োগ ও অনেককে হুমকি দেওয়া হয়।

জানা গেছে,চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম ও টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির সদস্য রাসেল হাওলাদার।কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক রিয়াজ কেরানি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মঞ্জু হাওলাদারও টুর্নামেন্টের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালাইয়া বন্দর ও লঞ্চঘাট এলাকায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মাছের আড়ত, একাধিক ব্যাংক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছ

বাউফলে ফুটবল টুর্নামেন্ট অর্থ আদায়ে একজোট হয়ে মাঠে নামে বিএনপি-আ’লীগ থেকে চাঁদা তোলা হয়। ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও চাঁদা দিতে হয়েছে।এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বিএনপি নেতারা দলবল নিয়ে খেলার নামে চাঁদা তুলতে নেমেছেন।তারা যা চেয়েছেন তা-ই দিতে হয়েছে।না দিয়ে তো উপায় নাই। একাধিক শিক্ষক বলেন,খেলার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও চাঁদা নেওয়া হয়। এমন ঘটনা এই প্রথম।বিএনপি নেতারা জোর করে চাঁদা নিয়েছেন।

তবে চাঁদা তোলার কথা অস্বীকার করে ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন,খেলায় সহায়তার জন্য যে যা দিয়েছে, তাই নিয়েছি।এ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয় ২৮ আগস্ট। এতে ৮টি দল অংশগ্রহণ করে। ফাইনাল খেলায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা দশমিনার লিয়ন একাদশ চ্যাম্পিয়ন হয়।

লিয়ন একাদশের টিম ম্যানেজার লিয়ন জানান,চ্যাম্পিয়ন দলকে ৩২ ইঞ্চি টেলিভিশন দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ২৪ ইঞ্চির টেলিভিশন।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী জানান, টুর্নামেন্ট আয়োজনে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়নি।ফাইনাল খেলার আমন্ত্রণপত্রে অনুমতি ছাড়াই প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন,চাঁদাবাজির বিষয়ে কিছু জানা নেই।

আরও খবর

Sponsered content