সারাদেশ

কুড়িয়ে পাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন-খায়রুল ইসলাম

  প্রতিনিধি ৫ এপ্রিল ২০২৫ , ৫:৪১:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বগুড়া প্রতিনিধি।।অটোরিকশায় ফেলে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাতে বগুড়া সদর থানায় স্বর্ণালংকার ও টাকা মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।সদর থানা পুলিশের ওসি এস এম মঈনুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।অভাবের কারণে সংসারের খরচ মেটাতে পড়ালেখার পাশাপাশি সিএনজি অটোরিকশা চালান খায়রুল ইসলাম।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী শাহিন হোসেন জানান,তিনি ২৯ মার্চ ব্যবসার কাজে বগুড়ায় আসেন।এখান থেকে কেনা অলংকার ও নগদ টাকা একটি কালো ব্যাগে ভরে বিকেলে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে শহরের সাতমাথা থেকে অটোরিকশায় ওঠেন।পরে বনানী এলাকায় পৌঁছে নগরবাড়ীগামী বাস দেখে দ্রুত রিকশা থেকে নেমে বাসে উঠে যান।বাসটি শাজাহানপুর এলাকায় পৌঁছালে তিনি বুঝতে পারেন কালো ব্যাগটি তার হাতে নেই।

এদিকে অটোরিকশার চালক খায়রুল ইফতার করতে শহরতলির বেতগাড়ী এলাকার বাড়িতে চলে যান।ইফতারের পর তিনি দেখেন রিকশার আসনের পেছনে একটি কালো ব্যাগ পড়ে আছে।পরে ব্যাগ খুলে ভেতরে কিছু কাপড়ের নিচে গয়না ও নগদ টাকা দেখতে পান।এতে তিনি অবাক হয়ে ব্যাগে আর তল্লাশি চালাতে সাহস করেননি।

খায়রুল পরে এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজেই কয়েক দিন ধরে মালিকের খোঁজ করতে থাকেন।শেষে না পেয়ে শুক্রবার বিকেলে পুলিশের দ্বারস্থ হন।পুলিশ ব্যাগ তল্লাশি করে একটি কাগজে লেখা ফোন নম্বরের সূত্র ধরে মালিক শাহিনকে সংবাদ দেন।সংবাদ পেয়ে রাতে শাহিন বগুড়া সদর থানায় আসেন।পরে কেনার রসিদ যাচাই বাছাই করে তাকে গয়না ও টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়।

স্বর্ণের গয়নাসহ ব্যাগ ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত শাহিন বলেন, ‘আমি স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী ছিলাম।গ্রাহকদের বিশ্বস্ততায় এবং তাদের সহযোগিতায় কিছুদিন আগে গোপালনগর বাজারে নিজেই দোকান দেই।বিভিন্ন গ্রাহকের অর্ডার নিয়ে বগুড়া থেকে স্বর্ণ কিনে গয়না তৈরি করে সরবরাহ করে থাকি। ব্যাগ হারিয়ে ভেবেছিলাম সব হারিয়ে ফেলেছি।ব্যাগে ২৬ লাখ টাকার গয়না ছিল।ব্যাগ ফিরে না পেলে আমি নিঃস্ব হয়ে যেতাম।অটোরিকশার চালক খায়রুলের সততা আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।’

এ বিষয়ে সদর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, খায়রুলের মতো শিক্ষার্থীরা সমাজের জন্য আশার আলো।সে শুধু সৎ নয়,দায়িত্বশীল ও মানবিকও।

আরও খবর

Sponsered content