সম্পাদকীয়

উচ্চ শিক্ষিত হতে গিয়ে আমরা দিন দিন আরও অমানুষ হয়ে যাচ্ছি—!

  প্রতিনিধি ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:২৫:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।অবশেষে বৃদ্ধাশ্রমেই আশ্রয় হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (অবঃ) অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল স্যারের।তিন সন্তানের মধ্যে মেয়ে সবার বড়,নাম রেজিনা ইয়াছমিন আমেরিকা প্রবাসী।বড় ছেলে উইং কমান্ডার (অব.) ইফতেখার হাসান।ছোট ছেলে রাকিব ইফতেখার হাসান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।জীবনে এত কিছু থাকার পরও আজ তার দু’চোখে অন্ধকার।থাকেন আগারগাঁও প্রবীণ নিবাসে।

দীর্ঘ ১৭ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন সুনামের সঙ্গে।২০০৬ সালে অবসর নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. এম আব্দুল আউয়াল (৭০)। অবসরের পর কিছুদিন ভালোই চলছিল তার। অধ্যাপক আব্দুল আউয়ালের সংসারে দুই ছেলে, এক মেয়ে।

আব্দুল আউয়াল জানান,শিক্ষকতার আগে ১৯৬৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এটমিক এনার্জিতে চাকরি করেছি। এরপর শিক্ষকতা।জীবনে অনেক টাকা-পয়সা উপার্জন করেছি। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নিয়েছি।এরপর ছেলে-মেয়েরা আমার খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেয়।

কল্যাণপুর হাউজিং এস্টেটে নিজের ফ্ল্যাট ছিল আব্দুল আউয়ালের। এছাড়া পল্লবীতেও বেশ কিছু জমি ছিল।কিন্তু এসব বড় ছেলে কৌশলে বিক্রি করে টাকা পয়সা নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন,আক্ষেপ করেই বলেন অধ্যাপক আউয়াল।

তিনি বলেন,ওরা আমাকে এতো কষ্ট দেয় কেন?আমাকে নিয়ে এতো ছলচাতুরি করে কেন?বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠেন অধ্যাপক।তিনি বলেন,আমি কি এই জন্য এতো কষ্ট করে ওদের মানুষ করেছিলাম?

অধ্যাপক আউয়াল বলেন,চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর কিছু দিন বড় ছেলের সঙ্গেই থাকতাম।ছেলের সংসারে থাকার সময় জানতে পারি ছেলে ও বউয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না।একদিন বাসায় থাকা অবস্থায় বউয়ের মুখে গালি শুনে বাসা থেকে নেমে আসি।আর ফিরে যাইনি।ওরাও কেউ খোঁজ নেয়নি।ছোট ছেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে আসে ২০১৪ সালে।এসে মিরপুর-১ নম্বরে একটি দোকানে আমার সঙ্গে দেখা করে কথা বলে।সেখানে গেলে আমাকে জানায় তার বিয়ে ঠিক হয়েছে।আমি ওর বাবা অথচ আমাকে জানালোও না যে বিয়ে করতে যাচ্ছে।বিয়ে করে আবার চলে যাবে, একথা শুনে ছেলের বউকে দেখতে চান তিনি।কিন্তু তার সাথে দেখা করা যাবে না বলে জানায় ছেলে।

এ অধ্যাপক আফসোসের সুরে বলছিলেন,অথচ এই ছেলের পড়ালেখার জন্যও পেনশনের টাকা থেকে ২৬ লাখ পাঠিয়েছি। সেই ছেলেও আমাকে কোনো দিন ফোন করে না।মাঝে মাঝে ইমেইলে চিঠি লেখে।

আরও খবর

Sponsered content