প্রতিনিধি ২৬ মার্চ ২০২৫ , ৬:০১:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তামিম ইকবালকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চাচা আকরাম খানের কাছে খবর গিয়েছিল,তামিম আর বেঁচে নেই।যা শুনে থমকে গিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য এর ঘণ্টা দেড়েক পরই স্বস্তির খবর পৌঁছায় তার কাছে।
সম্প্রতি ভাতিজা তামিমের সংকটাপন্ন সময়ের অবস্থা নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম।সে সময়কার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেছেন ভাতিজার জন্য দোয়া করা শুভাকাঙ্ক্ষীদের।তিনি জানিয়েছেন,এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তামিমকে নেয়া হবে বিদেশে।
গত সোমবার (২৪ মার্চ) ডিপিএল ম্যাচ খেলতে গিয়ে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। অস্বস্তি বৃদ্ধি পেলে নিজের গাড়িতেই পার্শ্ববর্তী সাভারের কেপিজে হাসপাতালে যান এই তারকা।এরপর পুনরায় মাঠে ফিরে আসেন। তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে নিতে বিকেএসপিতে হেলিকপ্টারও উড়িয়ে আনা হয়।কিন্তু দ্বিতীয় দফায় ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে তাকে আর হেলিকপ্টারেও ওঠানো সম্ভব হয়নি।ফলে ফের কেপিজে হাসপাতালে নেয়া হয়।চিকিৎসকরা ২২ মিনিট সিপিআর এবং ৩টি ডিসি শক দিয়ে তামিমকে চিকিৎসা দেয়ার মতো অবস্থায় নিয়ে আসেন। এরপর তার এনজিওগ্রাম করা হয় এবং ব্লক হয়ে যাওয়া ধমনিতে রিং (স্টেন্ট) বসানো হয়।
তবে এর মধ্যে পরিবারের অন্যতম সদস্য চাচা আকরামের কাছে খবর পৌঁছায়,বেঁচে নেই তামিম।যদিও ঘণ্টা দেড়েক পর আরেকটি খবরে চিন্তামুক্ত হোন তিনি।
সে পরিস্থিতির বর্ণনায় আকরাম বলেন,যখন আমি খবরটা পেয়েছি,দ্য নিউজ ওয়াজ ভেরি ব্যাড।আমাকে বলা হলো তামিম আর বেঁচে নেই।এটা কল্পনা করতে পারিনি।কোনোদিন ভাবিওনি এ ধরনের খবর শুনবো।এত অল্প বয়সী ছেলের মতো।এরপর ঘণ্টা দেড়েক বাড়িতেই ছিলাম।খুব আপসেট ছিলাম। ঘণ্টা দেড়েক পর ডাক্তাররা কল করলেন কনফারেন্সে।বললেন রিং লাগানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছে।তখন একটু স্বাভাবিক হয়েছি।যেহেতু রিং লাগাতে যাচ্ছে তার মানে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে।
চলতি ডিপিএলে দারুণ ছন্দে আছেন তামিম।করে যাচ্ছিলেন নিয়মিত পারফরম্যান্স।এর মধ্যে হঠাৎ এমন বড় ধরনের অসুস্থা কল্পনারও বাইরে ছিল আকরামের কাছে।
তিনি বলেন,স্পোর্টসের সাথে থাকা লোক,যে অসুস্থ হওয়ার আগের ১০ দিনে দুইটা সেঞ্চুরিও করেছে… কল্পনা করা যায় না।আমার সাথে সবাই খুব আপসেট হয়েছেন।
সাভারের কেপিজে হাসপাতালে চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে এসেছেন তামিম।সেখানে চিকিৎসকদের ভূমিকা তো ছিলই,ভক্ত-সমর্থকদের দোয়াকেও বড় কৃতিত্ব দিলেন আকরাম।
তিনি বলেন,তামিম যে জায়গা থেকে ফিরে এসেছে, আপনাদের দোয়া ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।প্রচুর কল-ম্যাসেজ পাচ্ছি।সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।কাল ডাক্তারের সাথেও কথা হয়েছে- এ ধরনের রোগী ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।আল্লাহ রহমতে ও ফিরে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সাভারের কেপিজে হাসপাতাল থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত হয়েছেন তামিম।অবস্থাও আগের চেয়ে ভালো।তবে দুশ্চিন্তা দূর করতে তাকে দেশের বাইরে নেয়ার পরিকল্পনা পরিবারের।
তার চাচা বলেন,এখন সে পর্যবেক্ষণে আছে।আরও ২-৩ দিন এই অবস্থায় থাকলে বাসায় নিয়ে আসতে পারব।যে চিকিৎসা হওয়ার তো হয়ে গেছে।তবে যত দ্রুত সম্ভব পারিবারিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের বাইরে নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করাব। দুশ্চিন্তা রাখতে চাচ্ছি না।