অপরাধ-আইন-আদালত

অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক-১

  প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২৩ , ২:৪০:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁর বন্ধু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফিকে আটক করেছে র‍্যাব।

আজ শুক্রবার র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পক্ষ থেকে এক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎই জানা যায় অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর খবর।হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনয়শিল্পী উর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম।তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে স্তব্ধ বিনোদন অঙ্গনের তারকারা।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহকর্মীকে হারানোর বেদনা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।তাঁকে লক্ষ্মীপুরে সমাহিত করা হবে।শুক্রবার বাদ জুমা হিমুর মরদেহ নিয়ে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান বলেন,অভিনয়শিল্পী হোমায়রা হিমুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।ময়নাতদন্ত শেষে চ্যানেল আই চত্বরে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।জানাজার পর শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।এরপর লক্ষ্মীপুরে মায়ের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

হোমায়রা হিমু ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।লক্ষ্মীপুরে ছোটবেলা কেটেছে হোমায়রা হিমুর। ক্লাস টুতে পড়ার সময় থেকেই কাজ করতেন মঞ্চে। বেসরকারি টিভি চ্যানেল দেশ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিমু নিজেই বলেছিলেন,ছোটবেলা থেকেই স্থানীয় হাইফাই কৌতুক শিল্পগোষ্ঠী ও ফ্রেন্ডস নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করতেন তিনি।

১৯৯৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর ঢাকায় আসেন হিমু। প্রথমে ভর্তি হন নাগরিক নাট্যাঙ্গনে।এরপর কাজ করেন আরও কয়েকটি নাটকের দলে।

এরপর এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে ফটোশুট করে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থায় মডেলিংয়ের জন্য জমা দেন।তখন এইডস নিয়ে সচেতনতামূলক একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেন।পরে তাঁকে দেখা যায় আরও কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রে।একটি চায়ের বিজ্ঞাপনচিত্রে তাঁকে দেখার পর প্রথম হিমুকে নাটকে সুযোগ দেন নির্মাতা তাহের শিপন।নাটকের নাম ছিল ‘পি আই’। তাঁর প্রথম সহশিল্পী ছিলেন প্রয়াত দিলীপ চক্রবর্তী।

২০০৫ সালে বিনোদন দুনিয়ায় কাজ শুরু করেন হুমায়রা হিমু।এই সময়ে তাঁর আসল নাম হুমায়রা নুসরাত হিমু থেকে হোমায়রা হিমু হয়।তাঁর এই নাম বদলের পেছনে রয়েছে অভিনেতা টনি ডায়েসের ভূমিকা।এ প্রসঙ্গে দেশ টিভিকে দেওয়া একই সাক্ষাৎকারে হিমু বলেছিলেন, ‘টনি ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম একটা টেলিফিল্ম করি।উনি তখন আমাকে বলেন, “তুমি দুই অক্ষরের নাম দাও।” এর আগে আমি কেবল “হিমু” বলে পরিচয় দিতাম।তখন টনি ভাই বলেন,“পৃথিবীর যত বিখ্যাত মানুষ আছে সবার নাম দুই অক্ষরের।” এর পর থেকেই আমি হোমায়রা হিমু হয়ে যাই।’

হিমু যখন স্কুলের ছাত্রী,তখন তাঁর স্কুলের এক বড় বোন শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন করেন।ঢাকা থেকে শুটিং করে স্কুলে ফেরার পর সবাই তাঁকে দেখতে আসেন।তখন তাঁকে দেখেই টিভিতে কাজ করার ইচ্ছা হয়।

তবে ছোটবেলায় হিমুর ইচ্ছা ছিল এয়ার হোস্টেস হওয়ার। কিন্তু ঘটনাচক্রে হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী।টিভি নাটকে অভিনয় শুরুর পর নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় তাঁর অভিনয় দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। ‘সোনাঘাট’, ‘চেয়ারম্যান বাড়ি’, ‘বাটিঘর’, ‘শোনে না সে শোনে না’, ‘কমেডি-৪২০’, ‘চাপাবাজ’, ‘অ্যাকশান গোয়েন্দা’, ‘ছায়াবিবি’, ‘এক কাপ চা’, ‘এ কেমন প্রতিদান’, ‘হুলো বিড়াল’, ‘ছন্নছাড়া ৪২০’, ‘অ্যাম্বুলেন্স ডাক্তার’, ‘পাগলা প্রেমিক’ ইত্যাদি নাটকে দেখা গেছে তাঁকে। ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় হিমুর। সিনেমাটিতে তরু আপা চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে।

আরও খবর

Sponsered content