প্রতিনিধি ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২:৫৯:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
মাজহারুল ইসলাম।।মিনিকেট বলতে কোনো ধান না থাকলেও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মোটা চাল মেশিনে প্রক্রিয়াজাত করে তা বাজারজাত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দেখতে ঝকঝকে ও চিকন এই চালের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহের সুযোগ নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে চলছে মিনিকেটের রমরমা ব্যবসা। বিষয়টি সরকারের উচ্চমহলে আলোচনা হওয়ার পর তা নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
‘মিনিকেট প্রতারণা’ নিয়ে ২০১৫ সালেও নড়েচড়ে বসেছিল সরকার। সর্বশেষ গত ১৮ জুলাই খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার মিনিকেট নিয়ে মুখ খুললে বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে।
বাংলাদেশের কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ চাল উৎপাদন ও বিপণন তদারককারী সরকারি দপ্তরগুলো মিনিকেট চালের নামে জালিয়াতি ও প্রতারণার প্রমাণ পেয়েছে।চিহ্নিত করা হয়েছে ৮ শতাধিক চালকল।সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো ইতিমধ্যে একাধিক বৈঠক করে মিনিকেট চাল বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান গতকাল রাতে বলেন, ‘মিনিকেট ব্যান্ড (নিষিদ্ধ) হবে।’
নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রথম ধাপে মিল মালিক, বিভিন্ন সুপার শপসহ মিনিকেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে জড়িতদের চিঠি দেওয়া হবে। চিঠিতে মিনিকেট ব্রান্ডের চাল উৎপাদন ও বাজারে না ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।’
কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, মিনিকেট বাজারজাতকারীদের চিঠি দেয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মিনিকেট নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোটা চাল অর্থাৎ ৪৫ টাকা কেজি দরের চাল রোলার ক্রাশিং মেশিনে সাত ধাপে চিকন ও উজ্জ্বল করা হয়। এরপর মিনিকেট নাম দিয়ে খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে। মিনিকেট প্রতারণা, ধোঁকা, ফাঁকি আর জালিয়াতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
তবে অভিযোগ মানতে নারাজ চালকল মালিক সমিতির নেতারা। আর মিনিকেট প্রতারণা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে যাকে মূল হোতা হিসেবে ইঙ্গিত করা হয়, রশিদ অটো রাইস মিলের সেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদও অস্বীকার করছেন প্রতারণার কথা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীতে মিনিকেট নামে কোনো ধানের জাত নেই।