অপরাধ-আইন-আদালত

দুদকের চিঠি নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

  প্রতিনিধি ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪:৫৩:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি চিঠি থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘দুদকের যে চিঠির বরাত দিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে,তা এখন পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তগত হয়নি।কী করে সংবেদনশীল এই চিঠি মিডিয়ায় প্ৰকাশ হলো,তা দুদক কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করে দেখবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়,সংবাদের বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে কথিত অভিযোগগুলো প্রধানত অডিট আপত্তি-সংক্রান্ত।দাফতরিক অডিট আপত্তি,যা প্রক্রিয়াধীন আছে এবং যা কর্মকর্তাদের পেনশনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ও অডিট রিপোর্টে চিহ্নিত,সেসব দাফতরিক আপত্তি ‘দুর্নীতি’ হিসেবে অবহিত করা গ্রহণযোগ্য নয়।

সংবাদে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয় যে,এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার,দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে নিজ ও পরিবারের নামে বিপুল পরিমাণে অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য রয়েছে।’ এ জাতীয় অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। তবে কোনও বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে যদি কোনও কর্মকর্তার ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী কোনও ব্যবস্থা নেয়,তাতে আমাদের সহযোগিতা ও সমর্থন থাকবে।

বিজ্ঞপিতে বলা হয়,এই চিঠিতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে,তাদের অনেকেই যথাসম্মানে তাদের কর্মজীবন শেষ করেছেন।তাদের সব অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করে পেনশন ভোগ করছেন।অনেকে এখনও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত আছেন। দুদকের এই চিঠির মাধ্যমে তথ্য চাওয়ায় এবং তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টির অবকাশ রয়েছে।ফলে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সম্মানহানিসহ পররাষ্ট্র ক্যাডার ও মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে জনমনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হতে পারে।এতে তাদের বর্তমান গুরুদায়িত্ব পালনে অন্তরায় সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।ফলে সরকারের কাজ ও দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে।

সর্বোপরি কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া এ জাতীয় ঢালাও মন্তব্য করা আইনের দৃষ্টিতেও অগ্রহণযোগ্য।পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তারা মনে করেন,দুর্নীতি দমন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা বিদ্যমান আইনি কাঠামোর বাইরে গিয়ে এরূপ একটি অগ্রহণযোগ্য কাজে লিপ্ত হয়েছেন,তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিরীক্ষা বা অডিট সরকারের একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, যাতে সরকারের ব্যয়-সংশ্লিষ্ট আর্থিক নিয়মাবলি অনুসারে সম্পাদন হয়েছে কি না তা যাচাই করা হয়।নিরীক্ষা অন্তে নিরীক্ষকরা তাদের মন্তব্য পেশ করেন,যার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কার্যালয় তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং উভয়ের সমন্বয়ে দায় নির্ধারণ হয়।

সরকারের প্রতিটি দফতরই অডিটের আওতাধীন।কোনও কর্মচারী-কর্মকর্তার কাছে অডিট বাবদ পাওনা থাকলে তা সরকারি কোষাগারে অবশ্যই ফেরতযোগ্য।কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি এই পাওনা টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন,তবে সেই পরিমাণ অর্থ তার পেনশন থেকে কেটে আদায় করা হয়। সুতরাং দাফতরিক অডিট আপত্তিকে ‘দুর্নীতি’ হিসেবে আখ্যায়িত করার কোনও অবকাশ নেই।

বিগত বছরগুলোয় অনেক ক্ষেত্রেই বিদেশের বাস্তবতা বিবেচনা না করে আর্থিক আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।ফলে দূতবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অডিট আপত্তির সম্মুখীন হচ্ছেন।এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে মহাহিসাব পরিদর্শক দফতর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে থাকে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

আরও খবর

Sponsered content